খুব সহজেই এখন বাড়িতে বসেই আপনি বানিয়ে ফেলতে পারবেন জন্ম সনদ (Birth Certificate) । আগেকার দিনের মতো আর জন্ম সার্টিফিকেট বানানোর জন্য আপনাকে পঞ্চায়েত অফিসে ঘোরাঘুরি করতে হবে না। আগেকার দিনে জন্ম সনদ বানাতে যেমন ব্লক অফিসে বা পৌরসভায় বা হাসপাতালে বা পঞ্চায়েত অফিসের দৌড়াদৌড়ি করতে হতো এখন আর আগের মত সেই নিয়ম নেই। এখন বাড়িতে বসেই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বানিয়ে ফেলতে পারবেন জন্ম সার্টিফিকেট। আর প্রতিটি নাগরিকের জন্ম সার্টিফিকেট থাকা বাধ্যতামূলক। তবে এবার সেই সমস্যার অবসান। এবার সেই পুরোনো পদ্ধতির অবসান ঘটিয়ে রাজ্য সরকার জন্ম নিবন্ধনের সম্পূর্ণ ব্যবস্থা অনলাইনে চালু করেছে। এর ফলে আর আপনাকে ঘোরাঘুরি করতে হবে না বাড়িতে বসে নিজের মোবাইল অথবা ল্যাপটপ দিয়ে বা যেকোনো অনলাইনে দোকানে গিয়ে আপনি সরাসরি অনলাইনে আবেদন করে জন্ম সনদ বানিয়ে ফেলতে পারবেন। কেন্দ্র সরকার যেমন চালু করেছে ডিজিটাল ইন্ডিয়া পরিষেবা ঠিক সেরকম ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশন আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।

কোথায় আবেদন করবেন?
এখানে আপনাকে সরাসরি অনলাইনের মাধ্যমে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন জানাতে হবে। অনলাইনে আবেদন জানানোর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটটি হলো -অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: eDistrict পোর্টাল
যারা নতুন করে আবেদন জানাবেন তাদের প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে তারপর আবেদন করতে হবে।
অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া
এখানে অনলাইনে আবেদন করতে হলে প্রথমেই অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে এরপর eDistrict পোর্টালে লগইন করুন। লগইন করা হয়ে গেলে আপনাকে-0
- Apply for Birth Registration অপশনটি সিলেক্ট করুন।
- এরপর যার নামে আবেদন জানাবেন তার নাম, জন্ম তারিখ, জন্মস্থান, বাবা-মায়ের নাম ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন। বিশেষভাবে মনে রাখবেন কোন ভুল করলে পরবর্তীকালে সেটি ঠিক করতে খুব সমস্যা হবে।
- অনলাইনে আবেদন করার পরে আপনার সার্টিফিকেটটি কি পর্যায়ে রয়েছে সেটি আপনি বাড়িতে বসে চেক করে নিতে পারবেন। এজন্য আপনাকে অনলাইনে আবেদনের সময় Acknowledgement Number দেওয়া হবে সেটি দিয়েই আপনি যেকোনো সময় বাড়িতে বসে মোবাইল দিয়ে ট্র্যাক করে দেখে নিতে পারবেন।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
অনলাইনে আবেদনের জন্য আবেদনকারী বেশ কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস থাকতে হবে। এখানে আবেদন করার জন্য যে সমস্ত ডকুমেন্টস প্রয়োজন সেগুলি হল-
- এক্ষেত্রে শিশুর যে স্থানে জন্মগ্রহণ করেছে অর্থাৎ হাসপাতাল কর্তৃক প্রদত্ত জন্ম প্রমাণপত্র / ডিসচার্জ স্লিপ, এটি দিয়ে বাড়িতে বসেই নিজে নিজে আবেদন করতে পারবেন অথবা হাসপাতালে বা নার্সিংহোমে গেলেও তারা আবেদন করে দিবে।
- পিতা মাতা অর্থাত্ অভিভাবকের পরিচয়পত্র (আধার কার্ড / ভোটার কার্ড / রেশন কার্ড)।
- আবেদন করার সময় অবশ্যই পাসপোর্ট সাইজের ফটো দিতে হবে
- আবেদনকারীর অভিভাবকের মোবাইল মোবাইল নম্বর ও ইমেইল আইডি দিতে হবে যেটি পরবর্তীকাল OTP ভেরিফিকেশনের জন্য কাজে লাগবে।
আবেদন মূল্য
এখানে খুবই সামান্য আবেদন মূল্য দিতে হবে মোটামুটি যদি একুশ দিনের মধ্যে করা যায় তাহলে কোন আবেদন মূল্য দিতে হবে না এবং কেউ যদি ২১ দিনের পরে করে তাহলে তাকে ৫০ টাকা চার্জ দিতে হতে পারে। এছাড়াও বেশি দেরিতে আবেদন করলে বেশ কিছু কাগজপত্র এবং কোর্ট এফিডেভিট করে তারপর আবেদন করতে হবে।আবেদনপত্র জমা করার এক মাসের মধ্যেই সার্টিফিকেট হাতে পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে আপনারা বাড়িতে বসে সার্টিফিকেট ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
কিভাবে সার্টিফিকেট ডাউনলোড করবেন?
আপনারা যেই ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করেছেন সেই ওয়েবসাইটেই অর্থাৎ eDistrict পোর্টালে গিয়ে Download Birth Certificate অপশনে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন নাম্বার এবং নাম ও জন্ম তারিখ দিয়ে সার্চ দিলেই মোবাইলে ওটিপি আসবে এবং ওটিপি বসালেই আপনি বার্থ সার্টিফিকেটের পিডিএফ ফাইলটি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
যারা যারা এখানে আবেদন জানাবেন তাদের বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে এখানে যে সমস্ত ডকুমেন্ট দেবেন সেগুলো সম্পূর্ণ অরিজিনাল এবং সঠিক হতে হবে কোন ভুল থাকলে সেটি পরবর্তীকালে সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও এখানে আবেদন জানানোর সময় যে সমস্ত ডকুমেন্টস আপলোড দেবেন সেগুলো পরিষ্কারভাবে স্ক্যান করে তারপর আপলোড দিতে হবে। এছাড়াও মোবাইল নাম্বার ও ইমেইল আইডি দিতেই হবে না হলে আপনার সার্টিফিকেট তৈরি হবে না।
জন্ম সার্টিফিকেট এর গুরুত্ব
বর্তমান দিনের জন্ম সার্টিফিকেটের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। জন্ম সার্টিফিকেট সমস্ত ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। স্কুল কলেজে ভর্তি থেকে শুরু করে সরকারি চাকরির আবেদন ও সরকারি চাকরির ভেরিফিকেশনের জন্য এমনকি পাসপোর্ট তৈরি ও নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্যও বর্তমান দিনে জন্ম সার্টিফিকেট বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্টস।
বর্তমান দিনের সমস্ত কিছু ডিজিটালাইজ হয়ে যাওয়ায় সমস্ত কাজকর্ম আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। আগে যেমন কোন কাজ করতে প্রচুর সময় খরচ করতে হতো এবং অনেক ঘোরাঘুরি করতে হতো কিন্তু বর্তমান দিনে আর তেমন ঘোরাঘুরি করতে হয় না সমস্ত কিছু বাড়িতে বসে অনলাইনের মাধ্যমে করা সম্ভব। বর্তমান ব্যস্ততার দিনে মানুষের হাতে সময় কম তাই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সমস্ত কাজ সম্পন্ন হয়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই পদক্ষেপ নাগরিকদের জীবনে যেমন সহজতা আনছে, তেমনি সরকারি পরিষেবার ডিজিটাল রূপান্তরের এক বড় উদাহরণ হয়ে উঠছে।

The Mehul Properties team has been involved in various types of news writing for a long time. With extensive experience in creating all kinds of informative content, government project updates, and different types of reports, the team has built a strong expertise in this field.